শুধু ডাক দিও
যখন অন্তর্মূল অস্থির যন্ত্রণায় পেঁচাতে থাকে,
দোমড়ায়, মোচড়ায়, কান্না আসে না,
কেবলি মুখমণ্ডল বিধ্বস্ত হয় কদাকার বন্ধ্যা বলিরেখায়,
প্রাণ আইঢাই মানুষ, ওহে দম বন্ধ হয়ে যাওয়া মনস্তাপ,
তখন শৈশবকে ডাক দিও
দেখবে,
মাতৃক্রোড়ে তোমার সর্বাঙ্গ হয়েছে মসৃণ সুউচ্চ ক্রন্দনে,
কান্নায় গলছে কঠিন শিলা ততোধিক কঠিন মন,
হাতের তালুতে নামছে চাঁদ, সূর্য, দূরান্তের বেলুন,
অসম্ভব টিয়াপাখি
তোমার কান্নাকে নির্ঝরিণী হাসি করে দিতে লক্ষ জন এসেছে ঘিরে
যখন বন্ধুরা
পলাতক ঢেউয়ের মতো দূরে সরে যায়, নাম ধরে ডাকলে
মনে হয় একটা অন্ধকার ধ্বনি ততোধিক অন্ধকার
সুড়ঙ্গ পথ এক পার হয়
অনন্তকাল ধরে অর্থহীন ঝমঝম শব্দে বেজে,
কৈশোরকে ডাক দিও,
মুহূর্তেই ভোর সকালের ভিজে বকুল ঝরবে তোমার পায়,
অজস্র ভুলে যাওয়া লতাগুল্মের নরম নাম
হুহু ডেকে উঠবে তোমার মনে,
যেন এক সুন্দর নন্দকিশোর ফুঁ দিবে বাঁশিতে
হাওয়ায় মাতাল পরিপূর্ণ খোলা মাঠে
গুমোট ঘরে নিঃসঙ্গ উত্থানহীন তুমি, ঠোঁটে মধু নেই
শুধুই স্বেদবিন্দু, জ্যোতি খুবলে খাওয়া চোখে শুধুই বঞ্চনা,
বুকের ভেতর নলের মতো শুধুই শূন্যতার এক
নিঃসীম যাতায়াত পথ ছাড়া আর কিছুই বুঝতে পারো না,
যৌবনকে ডাক দিও,
স্থুল স্থুল পর্দা ভেদ করে জোছনা আসবে,
দেখবে কামুকতার পরম কোলে বড্ড নন্দিত
প্রবল পুরুষ তুমি শুয়ে আছো,
তোমার দুহাত পচনশূন্য, দুটি-স্বচ্ছ ফল,
ছায়াচ্ছন্ন রাজপথ থেকে দ্বৈরথের তুর্যধ্বনি উঠছে
যে রণে মৃত্যু অমৃতেরও অধিক,
উত্থিত আনন্দে তুমি আপ্লুত ভিজে যাবে
তোমার কিছুই হারায়নি, লোলচর্মে নড়বড়ে অস্তিত্বে সবই আছে,
শুধু ডাক দিও।
0 Comments